Subscribe For Free Updates!

We'll not spam mate! We promise.

Tuesday, August 5, 2014

Basic Bengali Rules of Hajj

হজ শব্দের আভিধানিক অর্থ ইচ্ছা করা এর পারিভাষিক অর্থ আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে শরিয়তের নিয়মানুসারে নির্দিষ্ট সময়ে পবিত্র কাবা শরিফ সংশ্লিষ্ট স্থানগুলো জিয়ারত করা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম স্তম্ভ হজ

) ইহরাম বাঁধা ) - জিলহজ মিনায় অবস্থান ) জিলহজ সূর্যোদয়ের পরে মিনা থেকে আরাফাতে অবস্থান, সূর্যাস্তের পরে মুজদালিফায় যাওয়া ) জিলহজ মুজদালিফায় রাতযাপন ) ১০ জিলহজ মিনায় বড় জামারাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা, কোরবানি করা, মাথার চুল ফেলে দেওয়া ) ১২ জিলহজের মধ্যে তাওয়াফ জিয়ারত, সাঈ করা ) ১১, ১২ জিলহজ মিনায় জামারাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা  ) বিদায়ী তাওয়াফ



  
জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী অক্টোবর পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। এবার যাঁরা হজে যেতে চান, তাঁদের এখনই প্রস্তুতি শুরু করা দরকার। অন্তত মানসিক প্রস্তুতি।
বাংলাদেশ থেকে সরকারি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়া যায়। হজে যেতে চাইলে ২৯ মের মধ্যে নির্ধারিত ব্যাংকে টাকা জমা দিতে হবে।
বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত হজ এজেন্সির মাধ্যমে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯১ হাজার ৭৫৮ জন হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যেতে পারবেন।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. বজলুল হক বিশ্বাস জানান, এবার হজে যেতে চাইলে নিজ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট তৈরি করতে হবে। সরকারি বা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যেভাবেই যান না কেন কোথায় এবং কীভাবে থাকবেন, তা আগেই জেনে নেওয়া জরুরি। হজ প্যাকেজে সৌদি আরবে যাওয়া-আসা, মক্কা-মদিনায় থাকা-খাওয়াসহ প্যাকেজ সুবিধাগুলো চুক্তিপত্রে বুঝে নিতে হবে। প্রয়োজনে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করুন। পড়ে, বুঝে, যাচাই করে চুক্তিপত্রে সই করুন। হজের প্রয়োজনীয় তথ্য www.hajj.gov.bd— ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

এবার কত টাকা লাগবে
সরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি হজ প্যাকেজ রয়েছে। একটি প্যাকেজে হজযাত্রীর খরচ হবে তিন লাখ ৫৪ হাজার ৩১৬ টাকা। অন্যটিতে খরচ হবে দুই লাখ ৯৫ হাজার ৭৭৬ টাকা। ছাড়া কোরবানির জন্য প্রতিটি প্যাকেজে আরও খরচ হবে (৫০০ রিয়াল) সাড়ে ১০ হাজার টাকা।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় একাধিক প্যাকেজ রয়েছে। ন্যূনতম প্যাকেজ হলো দুই লাখ ৯৫ হাজার ৭৭৬ টাকা। ছাড়া তিন লাখ ৫৪ হাজার টাকা থেকে আরও বেশি টাকার প্যাকেজ রয়েছে
পরামর্শ
l ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত হজ এজেন্সির তালিকা www.haab-bd.com ঠিকানায়ও পাওয়া যাবে।
l কোন কোন এজেন্সির বিরুদ্ধে সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ রয়েছে, তা যাচাই করুন।
l হজ প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য তথ্য ঢাকার আশকোনা হজ অফিসে দেওয়া হয়।
l মক্কায় বাসার দূরত্ব নির্ধারিত হয় কাবা শরিফ থেকে। আর মদিনায় বাসার দূরত্ব মসজিদে নববী থেকে। বাসস্থান কত দূর, তার ওপর নির্ভর করে হজের ব্যয়ের টাকা। অর্থাৎ কাবা শরিফ থেকে বাসার দূরত্ব কম হলে খরচ বেড়ে যাবে। যত বেশি দূরত্ব হবে, খরচও তত কম হবে। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে হজের প্যাকেজ ঠিক করুন।
ভাষার ভিন্নতা, নতুন দেশ, নতুন পরিস্থিতির কারণে কিছুসংখ্যক হজযাত্রী সমস্যায় পড়ে থাকেন। কয়েকবার হজ পালন করেছেনএমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, কিছুটা ধারণা থাকলে সচেতন হলে অনেক সমস্যা দূর করা যায়। পাঠকের সুবিধার্থে তাঁদের কিছু পরামর্শ:
l আপনার নাম-ঠিকানা পাসপোর্টে ঠিক আছে কি না, যাচাই করে নিন। ২০ কপি ছবি সংগ্রহে রাখুন।
l কোনোভাবেই মধ্যস্বত্বভোগী, দালাল বা তথাকথিত মোয়াল্লেমের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন না।
l সরকারি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যেভাবেই হজে যান না কেন, হজ প্যাকেজের সুবিধা কী কী, ভালোভাবে বুঝে যাচাই করুন। কিছু খরচ নির্দিষ্ট আছে, যেমন বিমানভাড়া মোয়াল্লেম ফি। বাকি টাকা মক্কা-মদিনায় বাসস্থানের জন্য। হাজিদের আবাসন কোথায় হবে তার স্বচ্ছ ধারণা দেশ থেকেই জেনে রাখা প্রয়োজন।
l কিছু হজযাত্রী হেঁটে হজের আমলগুলো করে থাকেন। যেমন মক্কা থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। আরাফাত থেকে মুজদালিফার দূরত্ব প্রায় নয় কিলোমিটার। মুজদালিফা থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার। এসব স্থানবিশেষে হেঁটে যেতে আপনার এক থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
l মাহরাম (যেসব পুরুষের সঙ্গে দেখা করা জায়েজ। যেমন স্বামী, বাবা, আপন ভাই, আপন চাচা-মামা, ছেলে ইত্যাদি) ছাড়া নারী হজযাত্রী এককভাবে হজে গমনের যোগ্য বিবেচিত হবেন না। নারী হজযাত্রীকে মাহরামের সঙ্গে একত্রে টাকা জমা দিতে হবে।
l প্রয়োজনীয় বইপুস্তক, হজ গাইড সংগ্রহ করে পড়ুন। কয়েক বছর ধরে প্রথম আলো হজযাত্রীদের সহায়ক হজ গাইড প্রকাশ করে বিনা মূল্যে তা বিতরণ করে। এটি প্রথম আলোর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। অথবা হজের আগে হজক্যাম্পে হজযাত্রীদের হাতেও পৌঁছে দেওয়া হয়
হজ প্যাকেজে খরচের ভিন্নতা কেন?
প্যাকেজে সৌদি আরবে হজের জন্য অবস্থানের মেয়াদ, বিমানের ধরন (সরাসরি না অন্য বিমানবন্দর হয়ে সৌদি আরবে পৌঁছাবে), মক্কায় বাসার ধরন এবং তা কাবা শরিফ থেকে কত দূর, বাসায় লিফট আছে কি নেই, বাসা না হোটেল, খাবারের ব্যবস্থা আছে বা নেই, ঐতিহাসিক স্থানে বেড়ানোর ব্যবস্থা আছে বা নেই, কোরবানি আছে বা নেই ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে। একইভাবে মদিনার ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য। আবার মিনায় তাঁবুতে বা আজিজিয়ায় থাকা কিংবা না থাকা ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে হজের খরচের টাকার অঙ্ক
সরকারি ব্যবস্থাপনা
প্যাকেজ : সৌদি আরবের ভিসা, বিমানে যাওয়া-আসা, মক্কায় কাবা শরিফ থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার ২০০ মিটার মদিনায় মসজিদে নববী থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ মিটারের মধ্যে তাসরিয়াযুক্ত (সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের যাচাই করা বাসস্থান) বাসায় থাকার ব্যবস্থা।
প্যাকেজ : সৌদি আরবের ভিসা, বিমানে যাওয়া-আসা, মক্কায় কাবা শরিফ থেকে সর্বোচ্চ দুই কিলোমিটার মদিনায় মসজিদে নববী থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ মিটারের মধ্যে তাসরিয়াযুক্ত বাড়িতে আবাসন।
ছাড়া উভয় প্যাকেজে মক্কায় মদিনায় সৌদি নিয়ম অনুযায়ী একটি খাট, একটি বেড, একটি বালিশ একটি কম্বল (কক্ষ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত হবে, কোনো কোনো কক্ষে অতিরিক্ত পাখা থাকতে পারে), পাঁচ থেকে আটজনের জন্য একটি সংযুক্ত সাধারণ গোসলখানা-শৌচাগার, মিনায় তাঁবুতে প্রত্যেক হাজির জন্য জায়গা, জেদ্দা-মক্কা-মদিনা-মিনা-আরাফাতের ময়দানে যাওয়া-আসার জন্য পরিবহন, মক্কা মদিনায় সাধারণ চিকিৎসা, ফ্লাইটের আগে ঢাকার আশকোনা হজ ক্যাম্পে থাকার ব্যবস্থা, হজের আহকাম-আরকান সম্পর্কে নিবিড় প্রশিক্ষণ, বইপুস্তক সরবরাহ প্রভৃতি সুবিধা পাবেন হাজিরা। প্রতি ৪৫ জন হাজির জন্য একজন গাইড নিয়োগ করা হবে
সরকারি ব্যবস্থাপনায় খরচের খাত
দুই ধরনের প্যাকেজেই প্রতি হজযাত্রীর জন্য বিমানভাড়া এক লাখ ১৯ হাজার ৩৫৪ টাকা, জেদ্দা-মক্কা-মদিনা-মিনা-আরাফাতের যাতায়াত ব্যয়, মিনায় তাঁবু ভাড়া মোয়াল্লেম ফি ২৩ হাজার ২৮৯ টাকা, মিনা-আরাফাতে মোয়াল্লেমের অতিরিক্ত খরচ ১৭ হাজার ৮৫০ টাকা, হজ গাইড সাত হাজার ৭০৩ টাকা, মিনা আরাফাতে ট্রেন ভাড়া পাঁচ হাজার ২৫০ টাকা, স্থানীয় সেবামূল্য ৮০০ টাকা, হজ প্রশিক্ষণ ফি ৩০০ টাকা আপৎকালীন তহবিল ২০০ টাকা, খাবার খরচ বাবদ ২৯ হাজার ৪০০, ব্যাগ বাবদ এক হাজার ৭০০ টাকা।
ছাড়া প্রতি হজযাত্রীর জন্য মক্কা-মদিনায় বাড়িভাড়া একটি প্যাকেজে এক লাখ ৪৮ হাজার ৪৭০ টাকা, অন্য প্যাকেজে ৯১ হাজার ২০৩ টাকা। হজ গাইড একটি প্যাকেজে সাত হাজার ৭০৩ টাকা, অন্য প্যাকেজে ছয় হাজার ৪৩০ টাকা
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় খরচের খাত
হজ এজেন্সির মাধ্যমে প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য বিমানভাড়া এক লাখ ১৯ হাজার ৩৫৪ টাকা, জেদ্দা-মক্কা-মদিনা-মিনা-আরাফাতের যাতায়াত ব্যয়, মিনায় তাঁবু ভাড়া মোয়াল্লেম ফি ২৫ হাজার ২৮৪ টাকা, স্থানীয় সেবামূল্য ৮০০ টাকা, প্রশিক্ষণ ফি ৩০০ টাকা আপৎকালীন তহবিল ২০০ টাকা, খাবার খরচ বাবদ ৩০ হাজার ৮৭০ এবং ব্যাগ বাবদ এক হাজার ৭০০ টাকা খরচ হবে। ছাড়া মক্কা-মদিনায় বাড়িভাড়া, মিনা-আরাফাতে মোয়াল্লেমের অতিরিক্ত খরচ, মিনা-আরাফাতে ট্রেন ভাড়া, হজ গাইড কোরবানির খরচ এজেন্সি প্যাকেজ অনুযায়ী ঠিক করে থাকে
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সিগুলোর সংগঠন হলো হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) হাবের মূল কাজ হলো সৌদি বাংলাদেশ সরকারের হজ ওমরাহ নীতিমালা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা। হাবের ওয়েবসাইট www.haab-bd.com. ঠিকানা: সাত্তার সেন্টার (১৬তম তলা), হোটেল ভিক্টোরি, ৩০/ নয়াপল্টন, ভিআইপি রোড, ঢাকা
হজের টাকা কোন ব্যাংকে জমা দেবেন
হজের ব্যয় বাবদ টাকা নিম্নলিখিত ব্যাংকের যেকোনো শাখায় জমা দেওয়া যাবে. সোনালী ব্যাংক লিমিটেড . অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড . জনতা ব্যাংক লিমিটেড . রূপালী ব্যাংক লিমিটেড . পূবালী ব্যাংক লিমিটেড . বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লিমিটেড . রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, রাজশাহী . আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড . ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ১০. দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড ১১. প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড ১২. প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড ১৩. মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড ১৪. স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড ১৫. ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড ১৬. ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড ১৭. ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড ১৮. সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ১৯. শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ২০. ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড ২১. ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) লিমিটেড ২২. এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড ২৩. স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেড ২৪. এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড ২৫. যমুনা ব্যাংক লিমিটেড ২৬. আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড ২৭. এবি ব্যাংক লিমিটেড ২৮. ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড ২৯. ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড ৩০. মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড ৩১. এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড ৩২.সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড ৩৩. আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক লিমিটেড
পাসপোর্ট বানাবেন যেখানে
ঢাকায় আগারগাঁওয়ে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। এটিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মোট ৩৩টি আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে। হজযাত্রীরা নিজ নিজ জেলা অনুযায়ী পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়সহ আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে পাসপোর্ট বানাতে পারবেন। ছাড়া প্রতিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাসপোর্টের আলাদা শাখা রয়েছে, সেখান থেকেও ওই জেলায় বসবাসকারীরা পাসপোর্ট বানাতে পারবেন। আবেদনপত্রসহ আরও তথ্য www.passport.gov.bd ঠিকানায় পাওয়া যাবে
হজের আবেদনপত্র
হজের আবেদনপত্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জেলা বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দ্বীনি দাওয়াত বিভাগের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, তালিকাভুক্ত ৩৩টি ব্যাংকের শাখা (যেখানে টাকা জমা দিতে হবে) এবং বাংলাদেশ সচিবালয়, ভবন নম্বর , হজ শাখা, কক্ষ নম্বর ১০৩, ঢাকায় হজ অফিস, আশকোনা থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ এবং জমা করা যাবে। ছাড়া www.hajj.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে ফরম পূরণ করে ডাউনলোড প্রিন্ট আউট নিয়ে স্বাক্ষরসহ ওই সব কার্যালয়ের যেকোনোটিতে জমা দেওয়া যাবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় আবেদনপত্র আগামী জুনের মধ্যে জমা দিতে হবে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গেলে নিজ নিজ এজেন্সি থেকে আবেদন সংগ্রহ এবং আবেদনপত্র টাকা জমা দেওয়া যাবে ২৯ মের মধ্যে
স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রতিষেধক
হজে যাওয়ার আগে প্রত্যেক হজযাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালসহ বিভিন্ন জেলায় সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, ঢাকায় সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রতিষেধক নিতে হবে। ছাড়া হজের আগে উত্তরা আশকোনা হজ অফিসেও কাজ সম্পন্ন করা হয়।
প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা, মেনিনজাইটিস ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিষেধক টিকা এবং স্বাস্থ্যসনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক। হজে যাওয়ার আগে এই স্বাস্থ্যসনদ নিতে হবে। আর ৭০ বছর বা ততোধিক বয়স্ক হজযাত্রীদের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত বোর্ডের বিশেষ স্বাস্থ্যসনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক।
সৌদি আরবে বিমানবন্দরে পৌঁছে প্রত্যেক হজযাত্রীকে স্বাস্থ্যসনদ, পরিচয়পত্র এবং কবজি বেল্ট বহন করতে হয়। এটি বাধ্যতামূলক। তাই হজের আবেদনপত্রে স্বাস্থ্যসম্পর্কিত তথ্য যথাযথভাবে পূরণ করা জরুরি
পাসপোর্ট
নিজ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট তৈরি করুন। মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে নবায়ন করুন। উভয় ব্যবস্থা-পনাতেই টাকা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৯ মে। এই তারিখের আগেই পাসপোর্টের বিষয়টি নিশ্চিত করুন। পাঁচ বছরের মধ্যে হজ পালন করলে সৌদি সরকার এবার তাঁদের হজ ভিসা দেবে না।
মাধ্যম
সরকারি বেসরকারি মাধ্যমে হজে যাওয়া যায়। উভয় ব্যবস্থাপনায় একাধিক প্যাকেজ রয়েছে। এর মধ্যে ন্যূনতম খরচ দুই লাখ ৯৫ হাজার ৭৭৬ টাকা। মক্কার কাবা শরিফ এবং মদিনার মসজিদে নববী থেকে বাসস্থান কত দূর, তার ওপর নির্ভর করে টাকার অঙ্ক।
টাকা জমা
টাকা জমা দেওয়ার আগে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীরা এজেন্সিগুলো যাচাই করে নিন। কোনো কোনো এজেন্সির বিরুদ্ধে সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি বা বেসরকারি ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী নির্ধারিত ৩৩ ব্যাংকের শাখায় টাকা জমা দিন। রসিদ ছাড়া কাউকে টাকা দেবেন না।
নিয়মকানুন
প্রয়োজনীয় বইপুস্তক, হজ গাইড সংগ্রহ করে পড়ুন। যাঁরা হজে গেছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করুন। হজ ক্যাম্প, আশকোনা, ঢাকা; জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যালয় এবং www.hajj.gov.bd ঠিকানায় হজ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য পাবেন
হজ বিষয়ক যেকোনো তথ্য
পরিচালক, হজ অফিস, আশকোনা, উত্তরা, ঢাকা
(
ফোন: ৮৯৫৮৪৬২ ৭৯১২৩৯১) এবং ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে (ফোন: ৯৫৭৬৩৪৯, ৯৫১২২৩৯, ৯৫১২২৩৮, ৭১৬০৩৯৭)যোগাযোগ করে যেকোনো তথ্য নিতে পারেন।
ছাড়া প্রতিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, জেলার উপপরিচালক এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে হজ্ব ও ওমরাহ্ 
সংকলনে: মাওলানা মুহাম্মদ আমিনুল হক

হজ্জের ফরজ ৩টি
ইহরাম বাধা । উ'কুফে আ'রাফা (আরাফাতের ময়দানে অবস্থান) । তাওয়াফুয্ যিয়ারাত
 
হজ্জের ওয়াজিব ৬টি
(
) 'সাফা ও মারওয়া' পাহাড় দ্বয়ের মাঝে ৭ বার সায়ী করা।
(
) অকুফে মুযদালিফায় (৯ই জিলহজ্জ) অর্থাৎ সুবহে সাদিক থেকে সুর্যদয় পর্যন্ত একমুহুর্তের জন্য
হলেও অবস্থান করা।
(
) মিনায় তিন শয়তান (জামারাত) সমূহকে পাথর নিপে করা।
(
) 'হজ্জে তামাত্তু' 'কি্বরান' কারীগণ 'হজ্জ' সমাপনের জন্য দমে শোকর করা।
(
) এহরাম খোলার পূর্বে মাথার চুল মুন্ডানো বা ছাটা।
(
) মক্কার বাইরের লোকদের জন্য তাওয়াফে বিদা অর্থাৎ মক্কা থেকে বিদায়কালীন তাওয়াফ করা।
এছাড়া আর যে সমস্ত আমল রয়েছে সব সুন্নাত অথবা মুস্তাহাব।

ওমরাহর ফরজ, ওয়াজিব
দুইটি ফরজ: () ইহরাম পরিধান করা () তাওয়াফ
দুইটি ওয়াজিব: () সাফা ও মারওয়া মধ্যবর্তী (সবুজ বাতি) স্থানে সাতবার সায়ী করা () মাথার চুল
মুন্ডানো বা ছাটা।

তালবিয়া
''
লাব্বাঈক আল্লাহুম্মা লাব্বাঈক, লাব্বাঈক, লা-শারীকা-লাকা লাব্বাঈক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্ নি'মাতা লাকা ওয়াল-মুল্ক, লা শারীকালাক।"
অর্থ: আমি হাজির হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত! আপনার ডাকে সাড়া দিতে আমি হাজির। আপনার কোন অংশীদার নেই। নিঃসন্দেহে সমস্ত প্রশংসা ও সম্পদরাজি আপনার এবং একচ্ছত্র আধিপত্য আপনার।
আপনার কোন অংশীদার নেই।

ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ
(
) সেলাইযুক্ত যে কোন কাপড় বা জুতা ব্যবহার, এক্ষেত্রে স্পঞ্জ সেন্ডেলের ব্যবহার করা।
(
) মস্তক ও মুখমন্ডল (ইহরামের কাপড়সহ যে কোন কাপড় দ্বারা) ঢাকা,
(
) পায়ের পিঠ ঢেকে যায় এমন জুতা পরা।
(
) চুলকাটা বা ছিড়ে ফেলা,
(
) নখকাটা,
(
) ঘ্রানযুক্ত তৈল বা আতর লাগানো।
(
) স্ত্রীর সঙ্গে সংগম করা।
(
) যৌন উত্তেজনামূলক কোন আচরণ বা কোন কথা বলা।
(
) শিকার করা।
(
১০) ঝগড়া বিবাদ বা যুদ্ধ করা।
(
১১) চুল দাড়িতে চিরুনী বা আঙ্গুলী চালনা করা, যাতে ছিড়ার আশংকা থাকে।
(
১২) শরীরে সাবান লাগানো। হজ্জের প্রকার ও নিয়তসমূহ

প্রথম প্রকার হজ্জে ইফরাদ
বর্ণনা: ওমরাহ্ ব্যতিত শুধু হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধা এবং হজ্জের সাথে ওমরাহকে না মিলানো। (বদলী হজ্জের জন্যও এই হজ্জ)
নিয়্যাত: আল্লাহুমা ইন্নী উরীদুল হাজ্জা ফায়াসছির হুলিওয়াতা কাব্বালহুমিনি্ন। (বাংলা নিয়ত- আল্লাহ আমি ইফরাদ হজ্জের উদ্দেশ্যে আপনার সন্তুষ্টির জন্য ইহরাম বাধলাম। তা সহজ করে দিন ও কবুল করে নিন)
 
দ্বিতীয় প্রকার হজ্জে কি্বরান
বর্ণনা: একত্রে একই স্থান থেকে হজ্জ ও ওমরার নিয়্যাত করে হজ্জের সাথে ওমরাহকে মিলানো এবং একই ইহ্রামে উভয়টি আদায় করা।
নিয়্যাত: আল্লাহুমা ইন্নী উরীদুল উ'মরাতা ফায়াচ্ছির লী-ওয়াতাক্াব্বাল মিন্নী। বাংলা নিয়ত- হে আল্লাহ আমি আপনার উদ্দেশ্যে হজ্জে কি্বরানের জন্য ইহরাম বাধলাম তা সহজ করে দিন ও কবুল করে নিন।

তৃতীয় প্রকার হজ্জে তামাত্তু
বর্ণনা: একই সফরে পৃথক পৃথক ভাবে 'ইহরাম' পরিধান করে 'হজ্জ ও ওমরাহ' আদায় করা। প্রথম ইহ্রামে ওমরাহর নিয়্যাত করে তা পালন শেষে চুল কেটে 'ইহরাম' খুলে হালাল হয়ে দ্বিতীয় বার নতুন করে
হজ্জের নিয়্যাতে ৮ই জিলহজ্জ 'মক্ক শরীফ' থেকে হজ্জের জন্য ইহরাম বাধা। তামাত্তু করার ইচ্ছা থাকলে প্রথমে ওমরার নিয়্যাত করে এহরাম বাঁধুন।

শুধু ওমরাহর নিয়্যাত
আল্লাহুমা ইন্নী উরীদুল উম'রাতা ফায়াচ্ছির লী-ওয়াতাক্াব্বাল মিন্নী। বাংলা নিয়ত- হে আল্লাহ আমি ওমরাহ্ পালনের জন্য ইহরাম বাধলাম তা সহজ করে দিন এবং কবুল করে নিন।

শুধু হজ্জের নিয়্যাত
আল্লাহুম্মা ইন্নী উরীদুল হাজ্জা ফায়াচ্ছিরহু-লী অ-তাকাব্বালহু মিন্নী। বাংলা নিয়ত- হে আল্লাহ আমি পবিত্র হজ্জ পালনের জন্য ইহরাম বেধে নিয়ত করলাম তা সহজ করে দিন এবং কবুল করে নিন।

তাওয়াফের বিবরণ
হাজীদের সর্বপ্রথম কাজই হলো (তামাত্তু ও ক্বেরান কারীগণ) নিজের মালছামানগুছিয়ে রেখে পাকপবিত্র হয়ে মোটেই দেরী না করে 'হারাম শরীফে' হাজিরা দেওয়া এবং 'তাওয়াফ' করা। ওমরাহ এবং হজ্জের
তাওয়াফ ব্যাতিত নফল তাওয়াফ ও করা যায়। যেমন: রাসূল (দঃ), সাহাবা-আওলিয়া, আহ্লে বাইত, মা-বাবা, পীর-উস্তাদ ও অন্যান্য মুরুব্বী বা সন্তানদের স্মরনে বা তাঁদের নামে তাওয়াফ করা।

তাওয়াফের ওয়াজিব সমূহ
(
) শরীর পাক-সাফ রাখা, ওজু করা। মহিলাদের হায়েজ নেফাছ অবস্থায় তাওয়াফ করা জায়েজ নাই।
(
) ছতর ঢাকা। অর্থাৎ যেটুকু ঢাকা প্রত্যেক পুরুষ-নারীর জন্য ফরজ।
(
) 'হাতীমে কা'বার' বাইরে থেকে 'তাওয়াফ' করা।
(
) পায়ে হেঁটে 'তাওয়াফ' করা। অম ব্যক্তি খাটিয়ার মাধ্যমে 'তাওয়াফ' করতে পারেন।
(
) 'হাজ্রে আস্ওয়াদ' থেকে শুরু করে ডানদিক দিয়ে 'তাওয়াফ' শুরু করা।
(
) এক নাগাড়ে বিরতিহীন ভাবে 'সাতবার চক্কর' দিয়ে 'তাওয়াফ' পূর্ণ করা।
(
) 'সাত চক্করে' এক 'তাওয়াফ', এটা পূর্ণ হলেই 'তাওয়াফের' নামাজ পড়া।

তাওয়াফের সুন্নত কার্যাবলী
(
) 'তাওয়াফে'র শুরুতে 'হাজারে আসওয়াদ' এর দিকে মুখ করা।
(
) সম্ভব হলে 'হাজ্রে আস্ওয়াদ' চুম্বন করা। নতুবা হাত দ্বারা দূর থেকে ইশারা করা, এবং মুখে
'
বিসমিল্লাহি আল্লাহু আক্বার ওয়ালিল্লাহিল হ্ামদ' বলা।
(
) 'হা্জ্রে অস্ওয়াদ' বরাবর দাঁড়িয়ে তাকবীরে তাহরিমা'র ন্যায় উভয় হাত সিনা পর্যন্ত উঠান।
(
) যে 'তাওয়াফে'র পরে 'সাঈ' আছে তাতে 'এযতেবা' করা। অর্থাৎ ইহরামের চাদরের (উপরের
অংশের) দুই মাথা ডান বগলের নিচ দিয়ে বাম কাঁধের উপর ফেলে দেওয়া।
(
) 'সাঈ' যুক্ত 'তাওয়াফে'র প্রথম তিন চক্করে 'রমল' করা। অথর্াৎ বীরের মত হেলে দুলে জোর ক্বদমে
(
একের পর এক পা ফেলে) চলা।
(
) বাকী চার চক্কর সাধারণ গতিতে (ধীরে ধীরে) সম্পন্ন করা।
(
) প্রত্যেক চক্কর তাওয়াফ শেষ করে এবং শেষ চক্করেরও পরে 'হাজ্রে অস্ওয়াদ'কে চুম্বন করা।
সম্ভব না হলে দূর থেকে ইশারা করে বিসমিল্লাহে আল্লাহ আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ্"দোয়াটি পাঠ
করা এবং ৩ নং নিয়মের ন্যায় দাড়িয়ে ইশারা করে 'তাওয়াফ' শেষ করা।

তাওয়াফের নিয়্যাত
আল্লাহুম্মা ইন্নী উরীদু তাওয়াফা বাইতিকাল হারাম ফায়াচ্ছিরহু-লী, ওয়া তাক্বাব্বাল-হু-মিন্নী, সাবাআ'তা আশ্ওয়াতি্বন লিল্লাহি তায়া'লা। বাংলায় নিয়ত- হে আল্লাহ আমি তাওয়াফ পালনের জন্য নিয়ত করলাম।

সায়ীর নিয়ম
'
হজ্জ ও ওমরাহ' ছাড়া নফল 'তাওয়াফে'র কোন সায়ী নাই। কারো নামে ওমরাহ করতে হলেও সায়ী করতে হবে। সায়ী অর্থ দৌড়ানো। এটা 'ছাফা' পাহাড় থেকে প্রথমে শুরু করতে হবে। ছাফা থেকে মারওয়া।
মারওয়া থেকে ছাফায়। এভাবে সাতবার সায়ীর সময় প্রথম তিন চক্কর সবুজ বাতির মাঝের অংশটুকু দৌড়ে দৌড়ে হেলে দুলে যাওয়া সুন্নাত (পুরুষদের জন্য)পরের চার চক্কর সাধারণ গতিতে সম্পন্ন করতে হবে।

সায়ীর সহজ দোয়া
সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার ওয়া লা-হাওলা, ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহিল আ'লিয়্যিল আ'যীম, রাবি্বগফির ওয়ারহাম ওয়াআনতাল আ-আজ্জুল আকরাম।

সায়ীর কুরআনী দোয়া
'
ইন্নাছ্ ছাফা ওয়াল মারওয়াতা মিন্ শাআ'ইরিল্লাহ্ ফামান হাজ্জাল বাইতা আও-' তামারা ফালা জুনাহা আ'লাইহি আইয়াত্ত্বাওয়াফা বিহিমা ওমান তাত্বাওয়াআ খাইরান ফা-ইন্নাল্লাহা শাকিরুণ আ'লীম।" উপরোক্ত
দুই দোয়া সাতবার চক্করের সময় হাটতে চলতে পড়তে হবে। পরেরটি না পারলে উপরেরটিই যথেষ্ট হবে। 
হজ্জ ও ওমরাহর করনীয়
একনজরে তিন প্রকার হজ্জের জরুরী কাজ, হুকুম ও তারিখ সমূহ।
১ম প্রকার হজ্জে ইফরাদের ১১টি জরুরী কাজ
 ১ম প্রকার হজ্জে ইফরাদের ১১টি জরুরী কাজ
২য় প্রকার হজ্জে কেরানের জরুরী কাজ
৩য় প্রকার হজ্জে তামাত্তুর ১৫টি জরুরী কাজ
৩টি ফরজ
 (
) ইহরাম (শুধু হজ্জের জন্য)
 (
) ই জিলহজ্জ উ'কুফে আ'রাফা (সূর্য হেলার পর থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত)
 () ১০ থেকে ১২ই জিলহজ্জ তাওয়াফে যিয়ারাত তবে ১০ই জি্বলহজ্ব তারিখই উত্তম।
 (
) অকুফে মুযদালেফায় ১০ই জিলহজ্জ সুবহে সাদেক সূর্য উদয় পর্যন্ত।
 (
) ১০ই জিলহজ্জ বড় শয়তানকে (জামারাতে আক্কাবায়) ৭টি কঙ্কর মারা। সুর্য হেলার পূর্বে দুপুর ১২টার আগে সুন্নত।
 (
) মাথা মুন্ডানো তবে দম দিতে হবে।
 (
) সায়ী ৯ তারিখের পূর্বে বা পরে) করে দিবেন।
 (
) ১১ তারিখে তিন শয়তানকে (প্রথম ছোট/মেঝ ও পড়ে বড়) ৭ক্ম৩=২১টি পাথর মারা।
 (
) ১২ তারিখে অনুরূপ তিন শয়তানকে ৭ক্ম৩= ২১টি পাথর মারা। সর্বমোট তিন দিনে ৭+২১+২১=৪৯টি কঙ্কর মারা।
 (
১০) 'বিদায়ী তাওয়াফে' (মক্কার বাইরের লোকদের জন্য) বিদায়ের পূর্বে। এটি ওয়াজিব।
 (
১১) তাওয়াফে কুদুম করা। (মক্কায় গিয়ে সর্বপ্রথম)
৩টি ফরজ

 (
) ইহরাম (হজ্জ ও ওমরাহর জন্য)
 (
) আরাফাতে অবস্থান।
 (
) তাওয়াফুয যিয়ারাত।

 
১০টি ওয়াজিব
 (
) ওমরাহর তাওয়াফ
 (
) ওমরাহর সায়ী
 (
) হজ্জের সায়ী
 (
) অকুফে মুযদালিফায়
 (
) ১০ই জিলহজ্ব তারিখে বড় শয়তানকে ৭টি পাথর মারা (দুপুর ১২টার পূর্বে) সুন্নত।
 (
) দম দিতে হবে।
 (
১০) মাথা মুন্ডানো।
 (
১১) ১১ই জিলহজ্ব তারিখে তিন শয়তানকে পাথর মারা
 (
১২) ১২ তারিখে তিন শয়তানকে পূর্বের ছকের নিয়মে পৃথক পৃথক ভাবে সূর্য হেলার পরে নিয়ম অনুযায়ী পাথর মারা।
 (
১৩) বিদায়ী তাওয়াফ।

৪টি ফরজ
 (
) ওমরাহর ইহরাম (বাংলাদেশ)
 (
) হজ্জের ইহরাম (তারিখ মক্কায়)
 (
) ,কুফে আরাফা (ই জিলহজ্জ সূর্য হেলার পর থেকে সুর্যস্তের পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত)
 (
) তাওয়াফে জিয়ারত (১০ তারিখ অথবা ১১, ১২ তারিখ)

 
১১টি ওয়াজিব
 (
) তাওয়াফে ওমরাহ (মক্কায় গিয়েই)
 (
) ওমরাহর সায়ী (ওমরাহ তাওয়াফের পরই)
 (
) মাথা মুন্ডানো (ওমরাহর পর)
 (
) হজ্জের সায়ী
 (
) বড় শয়তানকে টি পাথর মারা ( ১০ই জিলহজ্ব তারিখ সুর্য হেলার বা ১২টা পূর্বে) সুন্নত।
 (
১০) কুরবানী করা (পাথর মেরে ১০ তারিখ)
 (
১১) মাথা মুন্ডানো দম দিতে হবে।
 (
১২) ১১ তারিখ তিন শয়তানকে ++=২১টি পাথর মারা।
 (
১৩) ১২ তারিখে তিন শয়তানকে ++=২১টি পাথর মারা (সর্বমোট তিন দিনে +২১+২১=৪৯টি পাথর মারতে হবে)
 (১৪)
বিদায়ী তাওয়াফ।


একনজরে হজ্জের ৫টি দিন ও তার কাজ বা আ'মল সমূহ
৮ই জিলহজ্জ থেকে ১৩ই জিলহজ্জ হাজীদের কোথায় কি করণীয় তার বর্ণনা নিম্নরূপ:
(
বিঃ দ্রঃ শুধু হজ্জে ইফরাদের জন্য কুরবানী মুস্তাহাব। শুকুর করা এবং হজ্জে তামাত্তুতে তাওয়াফে কুদুম সুন্নাত নয়) এ ছাড়া তিন প্রকারের হজ্জের আমল ৫ দিনে একই।

১ম দিন ৮ই জিলহজ্জ
ইহরাম অবস্থায় (ফরয) মক্কা থেকে হজ্জের নিয়্যাতে মিনায় রওয়ানা হোন।

এ দিনের কাজ দু'টি
(
) ইহরাম (ফরজ) () ৫ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় আদায় করা (সুন্নাত)
যোহর, আছর, মাগরিব, এশা ও তারিখ ফজর সর্বমোট ওয়াক্ত

২য় দিন ৯ই জিলহজ্জ
আরাফাতে অবস্থান (ফরজ)। অকুফে মুযদালিফায় (ওয়াজিব)
 
আরাফাতে অবস্থান
-  
ফজরের নামাজ মিনায় পড়ে আরাফাতের ময়দানের দিকে রওয়ানা হোন।
-  
আরাফাতে সূর্য হেলার পর অর্থাৎ ১২টার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করা হজ্জের গুরুত্বপূর্ণ ফরজ।
-  
ওয়াক্ত মত তাবুতে (মসজিদে নামেরায় না গেলে) বা আরাফার ময়দানে যে কোন স্থানে জোহরের সময় জোহর নামাজ আদায় করুন।
-  
আসরের নামাজ আসরের সময় আদায় করুন, নির্দিষ্ট সময় বা আগে পরে, পৃথক পৃথক ভাবে।
-  
উল্লেখ্য: 'মসজিদে নামেরায়' জোহর ও আসরের জামাত এক আযান দুই ইকামাতে একত্রে আদায় করলে একত্রে দুই ওয়াক্ত আদায় করতে হয়, ওটার নাম 'জমে তাক্বদীম'কিন্তু তাবুতে বা অন্য কোন স্থানে
একত্রে নয়। ভিন্ন সময়
ভিন্ন ভাবে ওয়াক্ত মত আদায় করতে হবে।)
-  
সূর্যাস্তের পর সাথে সাথে মাগরিব না পড়ে মুযদালিফায় রওয়ানা হোন।
-  
মুযদালিফায় মাগরিব ও এশার নামাজ এক আযান দুই এক্বামাতে একত্রে আদায় করুন। এটা ওয়াজিব এটার নাম 'জামে তাখীর জামাতে পড়া উত্তম।
মুযদালিফায় অবস্থান (ওয়াজিব)
মুযদালিফায় থাকাকালীন পাহাড়ে অথবা তার পাদদেশে যে কোন ঘাস দুবলা থেকে খুঁজে খুঁজে পাথর মারার জন্য ৭২টি (চানাবুটের ন্যায় কঙ্কর) ছোট ছোট পাথর সংগ্রহ করে ইহরামের কাপড়ে বেঁধে নিন।
১০/১১/১২ তিন দিনে (৪৯টি পাথর) তিন শয়তানকে মারতে হবে।
-  
১ম দিন ৭টি
-  
২য় দিন ২১টি
-  
৩য় দিন ২১টি
(
সর্বমোট তিন দিনে ৭+২১+২১=৪৯টি )তবে মিসিং হতে পারে বলে বেশী (৭২) নেওয়া সুন্নাত।
 
৩য় দিন ১০ই জিলহজ্জ
এ দিনের মোট কাজ ৪টি () বড় শয়তানকে পাথর মারা () কুরবানী () মাথা মুন্ডানো () তাওয়াফে যিয়ারাত করা
-  
মুযদালিফায় ফজরের নামাজ পড়ে সূর্য উদয়ের আগ পর্যন্ত অবস্থান করুন (ওয়াজিব)
-  
মিনায় পৌছে বড় শয়তানকে টি পাথর সূর্য হেলার আগে (১২টার পূর্বেই) মারুন। (সুন্নাত)
-  তারপর তামাত্তু ও কি্বরান হজ্জকারীগণ কুরবানী করুন (ওয়াজিব)
-  এরপর ইহরাম খুলে হালাল হয়ে স্বাভাবিক পোষাক পরিধান করুন। কিন্তু কোরবানী পূর্বে নয়। (তবে ইফরাদ হজ্জকারী কুরবানী না করলেও চলবে)
-  
চুল ছাড়া বা মুন্ডানোর পর মক্কায় গিয়ে (সম্ভব হলে উত্তম) আজই তাওয়াফে যিয়ারত করুন। আজ করা সর্বোত্তম। (এটা ফরজ)
-  তাওয়াফ শেষে মিনায় এসে রাত্রি যাপন করুন সুন্নাত।
 
৪র্থ দিন ১১ই জিলহজ্জ
-  
১০ তারিখে কুরবানী, চুল ছাটা ও তাওয়াফে যিয়ারত না করে থাকলে আজ করুন।
-  
সূর্য হেলার পর থেকে (১২টার পর) মিনায় তিন শয়তানকে সূর্যাস্তের পূর্বে (প্রথম ছোট, তারপর মেজ অতঃপর বড়) ++=২১টি পাথর মারুন (ওয়াজিব)মিনায় রাত্রি যাপন করুন (সুন্নাত)
 
৫ম দিন ১২ই জিলহজ্জ
-  
তাওয়াফে যিয়ারত ১০/১১ তারিখে না করে থাকলে আজ সূর্যাস্তের পূর্বে অবশ্যই করুন।
-  
মিনায় সূর্য হেলার পর থেকে (সুন্নাত সময় হল) সূর্যাস্তের পূর্বে ৭++=২১টি পাথর (ছোট, মেজ ও বড় ) শয়তানকে মেরে সূর্যাস্তের পূর্বে) মক্কায় রওয়ানার চেষ্টা করুন।

জরুরী কথা
(
) তবে ১১/১২ তারিখ সূর্য হেলার পূর্বে পাথর মারলে আদায় হবে না। পূণরায় মারতে হবে। নতুবা  দম দিতে হবে।
(
) যদি ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্বে মীনা ত্যাগ করে মক্কায় রওয়ানা না হন তবে ১৩ তারিখ পূনরায় তিন  শয়তানকে ৭++=২১টি
পাথর (ছোট, মেজ ও বড় ) মেরে (পূর্বের নিয়মে) তারপর মক্কায় আসতে হবে।
(
) তাওয়াফে যিয়ারতের উত্তম সময় ১০ই জিলহজ্জ (তবে ৩ দিন, এর সব মোট সময়) শেষ সময়  ১২ই জিলহজ্জ সূর্যাস্ত পর্যন্ত।
(
) মক্কা থেকে মিনায় রওয়ানার পূর্বে যদি নফল তাওয়াফ করে হজ্জের নিয়্যাত সায়ী না করে থাকেন  (বা মিনায় আসেন) তাহলে হজ্জের পরে তাওয়াফে যিয়ারতের পর অবশ্যই হজ্জের সায়ী করুন।
(
ওয়াজিব)

যিয়ারাতে মদীনাহ
হজ্জের পূর্বে অথবা পরে (সুবিধামত) সময়ে হাজীদল তথা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (দঃ) এর পাগলপাড়া উম্মতগণ এক মূহুর্তে একদিন/তথা ৮ দিনের জন্য (সম্ভব হলে) নতুবা এক রাত হলেও মদীনা শরীফে
যান এবং রাসূলে পাক (দঃ) এর রওজা মোবারক যিয়ারত, রিয়াদুল জান্নাতে বসা (নামাজ আদায় করা) জান্নাতুল বাকী যিয়ারত করা এবং বিশেষতঃ ৮ দিনে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করাসহ বহু ঐতিহাসিক
স্থান তথা উহুদ পাহাড় ও বদর প্রান্তর দেখার সৌভাগ্য অর্জন করে থাকেন। এছাড়া মদীনা শরীফে আর কোন কাজ নেই। মূলতঃ মদীনা শরীফে মাসজিদে নববীতে নামাজ ও রাসূলের পাক (দঃ) এর রওজা শরীফ
যিয়ারতই হল প্রধান কাজ। যদি সম্ভব হয় বা সময় সূযোগ থাকে তাহলে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ (সুন্নাত) রয়েছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, ৮দিন=৪০ ওয়াক্ত থাকতেই হবে। এটা ফরজ বা ওয়াজিব নয়। আসলে
এটা সুন্নাত এবং হজ্জের অংশ নয়। মূলতঃ আশেকে রাসূল (দঃ) দের জন্য রাসূলে পাক (দঃ) এর রওজা মোবারক যিয়ারতের নিয়্যাতে যাওয়াই হল মূল।

বদলী হজ্জ
যে সকল মুসলিম নর-নারীর উপর হজ্জ ফরজ ছিল, তাঁদের মধ্যে যদি কেউ মৃতু্যবরণ করে অথবা জীবিত কিন্তু শারিরীক দুর্বলতা ও অসুস্থতা ও অমতার কারণে হজ্জ করতে অপারগ হয়, তাহলে অন্য কাউকে
দিয়ে বিশেষ করে বিজ্ঞ আলেম বা হজ্জে পারদশর্ী ব্যক্তি দ্বারা তাঁর বদলী হজ্জ করাতে পারবে। অথর্াৎ যাঁর জন্য বদলী হজ্জ করা হবে তাঁরই নামে ইহরাম পরিধান ও নিয়্যাত করে অন্য একজন হজ্জ আদায়
করতে পারবে।


Please Give Us Your 1 Minute In Sharing This Post!
SOCIALIZE IT →
FOLLOW US →
SHARE IT →
Powered By: BloggerYard.Com

0 comments:

Post a Comment